যুক্তরাষ্ট্রে দোকান থেকে চুরির অভিযোগে ধরা ভারতীয় নারী, ভিডিও ভাইরাল

 

যুক্তরাষ্ট্রে দোকান থেকে চুরির অভিযোগে ধরা ভারতীয় নারী, ভিডিও ভাইরাল




বিদেশ ভ্রমণের সময় নিজেদের আচরণে সচেতন না হলে কী ধরনের পরিস্থিতির মুখে পড়তে হয়, তার এক বাস্তব উদাহরণ হয়ে উঠেছেন এক ভারতীয় নারী। যুক্তরাষ্ট্রে ঘুরতে গিয়ে তিনি একটি দোকান থেকে দেড় লক্ষাধিক টাকার পণ্য চুরির অভিযোগে তদন্তের মুখে পড়েছেন। এই ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে তা নিয়ে দেশ-বিদেশে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়। বুধবার (১৬ জুলাই) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।

 ঘটনাটি ঘটেছে যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয় অঙ্গরাজ্যে, যেখানে ‘টার্গেট’ নামে খ্যাত খুচরা বিক্রেতা চেইনের একটি স্টোরে সন্দেহজনকভাবে ঘোরাফেরা করেন এক ভারতীয় নারী। ঘটনা ঘটে চলতি বছরের ১ মে। তিনি প্রায় সাত ঘণ্টা স্টোরে কাটিয়ে শেষ পর্যন্ত কোনো অর্থ না দিয়েই বেরিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। সন্দেহ হলে দোকানকর্মীরা পুলিশে খবর দেন এবং ঘটনাস্থলে পুলিশ এসে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির বরাতে জানা যায়, সন্দেহভাজন ওই নারী যুক্তরাষ্ট্রে ঘুরতে গিয়েছিলেন এবং স্টোর থেকে প্রায় ১,৩০০ ডলারের পণ্য নেওয়ার সময় তাকে হাতেনাতে ধরে ফেলে দোকান কর্তৃপক্ষ। পুলিশের বডিক্যামেরা ফুটেজে দেখা যায়, দোকানের এক কর্মী জানাচ্ছেন— “তিনি সাত ঘণ্টা ধরে ঘুরছিলেন, পণ্য তুলছিলেন, ফোনে যাচাই করছিলেন, কিন্তু কোনো কিছু কেনেননি।”

পুলিশ এসে তাকে চ্যালেঞ্জ করলে ওই নারী পণ্যের দাম পরিশোধের প্রস্তাব দেন এবং বলেন, “আমি এই দেশের মানুষ না, এখানেই থাকছি না। যদি আপনাদের বিরক্ত করে থাকি, আমি দুঃখিত।” জবাবে নারী পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, “আপনার দেশে— ভারতে কি চুরি বৈধ?” পরে তাকে হাতকড়া পরিয়ে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। যদিও এখনো তাকে আনুষ্ঠানিকভাবে গ্রেপ্তার করা হয়নি, তবে গুরুতর অপরাধ (ফেলোনি) অভিযোগ আনার প্রস্তুতি চলছে।

এই ঘটনার ভিডিও ইউটিউবে প্রকাশিত হওয়ার পর দ্রুত ভাইরাল হয়। ভিডিওর ক্যাপশনে লেখা হয়, “ঘণ্টার পর ঘণ্টা দোকানে কাটিয়ে হাজার ডলারের পণ্য চুরি করতে গিয়েছিলেন, কিন্তু ধরা পড়েন পুলিশে।”

 এই ভিডিওকে ঘিরে সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে, বিশেষ করে অভিবাসীদের আচরণ ও দায়িত্ব নিয়ে। একজন মন্তব্য করেন, “আমি নিজেও অভিবাসী, কিন্তু অতিথি দেশে গিয়ে এমন কাজ করার চিন্তাও করি না।” আরেকজন লিখেছেন, “ভাষা বা সংস্কৃতির কোনো ভুল বোঝাবুঝি ছিল না, সে জানত সে কী করছে।”
 
তৃতীয় একজন বলেন, “একজন অভিবাসী নিজের দেশ ও সংস্কৃতির প্রতিনিধি। এই নারী অপরাধ করেছে, এখন সহানুভূতির ভান করছে, যা ভারতে হয়তো চললেও আমেরিকায় চলে না।” অন্য একজন ক্ষোভের সঙ্গে লেখেন, “দেশকে আন্তর্জাতিক পরিসরে লজ্জায় ফেলেছে। এমন অপমানজনক কারণে ভারতের নাম উঠে এসেছে।” এর আগেও, যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাসে এক ভারতীয় শিক্ষার্থী চুরির অভিযোগে অভিযুক্ত হন, যা নিয়েও বিতর্ক হয়েছিল।
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url